Wednesday, August 26, 2015

ইউটিউবের কোটিপতি! এক বছরে ইউটিউব থেকে আয় ৫৬ কোটি টাকা!

পোস্ট করেছেন    
শিরোনামটা চমকে ওঠার মতোই। তবে ঘটনা সত্যি। ইউটিউবের সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যানেলের কর্ণধার ফেলিক্স কেলবার্গ, ইউটিউবে যার নাম ‘পিউডাইপাই’, গত বছরে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন ইউটিউবের মাধ্যমে। মাত্র ২৫ বছর বয়সী এই ইউটিউব সেলিব্রেটি তার চ্যানেলে মূলত নিজের খেলা সব গেমের ভিডিও আপলোড করে থাকেন এবং তাতেই তার চ্যানেল পরিণত হয়েছে ইউটিউবের শীর্ষ চ্যানেলগুলোর একটিতে। আর এর মাধ্যমেই তিনি গত বছরে ৭.৪ মিলিয়ন ডলার বা টাকার হিসাবে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন।

জনপ্রিয়তা সাফল্যের চাবিকাঠি
সম্প্রতি সুইডিশ একটি সংবাদপত্রে ফেলিক্স কেলবার্গ বা পিউডাইপাইয়ের উপার্জনের খবর প্রকাশ হলে পুনরায় নড়েচড়ে বসেন নেটিজেনরা। তবে খবরের সত্যতা নিয়ে কোনো ধরনের সন্দেহ প্রকাশ করেননি কেউই। বছরখানেক আগেও (২০১৪ সালের শেষের দিকে) ইউটিউব চ্যানেলে ফেলিক্সের সাবস্ক্রইবারের সংখ্যা ছিল ৩২.৬ মিলিয়ন। এর এক বছরেরও কম সময়ে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭.৭ মিলিয়ন। আগের সময়ে তার চ্যানেলের মোট ভিডিও দেখার সংখ্যা ছিল ৬.৯ বিলিয়ন বা ৬৯০ কোটি। সেখানে এরই মধ্যে তার ভিডিও দেখার সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৯ বিলিয়ন বা ৯০০ কোটি। ফলে ওই হিসেবে প্রতিজন সাবস্ক্রাইবারের জন্য ফেলিক্সের আয় গড়ে ২০ সেন্টেরও কম। তার মানে বিপুল পরিমাণ সাবস্ক্রাইবারের কারণেই মূলত ফেলিক্স বিপুল পরিমাণ অর্থও উপার্জন করে আসছে ইউটিউবের মাধ্যমে।

পিউডাইপাইয়ের প্রতিক্রিয়া

এদিকে নিজের আয়ের তথ্য প্রকাশ হয়ে যাওয়া নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশও করেছেন ফেলিক্স। ‘লেটস টক অ্যাবাউট মানি’ শিরোনামের এই ভিডিও আপলোড হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা দেখা হয় ১৬ লক্ষবারের চেয়েও বেশি। এ থেকেই তার জনপ্রিয়তার মাত্রাটি বুঝা যায় সহজেই। এই ভিডিওতে ফেলিক্স বলেন, ‘যখনই কোথাও প্রকাশ পেয়ে যায় যে বছরে আমার উপার্জন কত, তা দেখে অনেকেই হতভম্ব হয়ে পড়েন। কেউ কেউ রাগেও ফেটে পড়েন। তারা প্রায়শই মনে করে থাকেন যে আমি কেবল সারাদিন বসে থাকি আর ভিডিওর সামনে চিত্কার করতে থাকি। এটা একদিক থেকে সত্যি মনে হলেও আসলে আমি চিত্কার-চেঁচামেচির চাইতেও আরও বেশি কিছু করে থাকি, যা অনেকের মাথায় ঢোকে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘হঠাত্ করেই মনে হচ্ছে যেন আমি কী করি তার চাইতে মানুষজন আরও বেশি উদ্বিগ্ন আমি কত উপার্জন করি, সেটা নিয়ে। তারপরেও আমি আমার সকল ভক্ত-অনুসারীদের ধন্যবাদ জানাই আমার সাথে থাকার জন্য। আমি আজ যে অবস্থানে এসে পৌঁছেছি সেখানে না পৌঁছালেও আমি এই কাজই

করে যেতাম।’

ইউটিউব থেকে উপার্জন


ইউটিউবে ফেলিক্স বা পিউডাইপাইয়ের জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে এনডারস অ্যানালাইসিস নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মী ইয়ান মড বলেন, ‘বয়সে কৈশোর-তারুণ্যে থাকা জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে সে আকর্ষণ করে থাকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো। অনেকের কাছে তার আয়ের অংক বিস্ময়কর লাগতে পারে। কিন্তু প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, যুক্তরাজ্যের জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের সমান মানুষ তার ভিডিও নিয়মিত দেখে থাকে।’

ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে উপার্জনের






পিউডাইপাইয়ের এমন সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে উপার্জনের বিষয়টিকে পেশাদার হিসেবে গ্রহণ করতে আগ্রহী হতে পারেন। সেটা দোষেরও কিছু নয়। তবে ফেলিক্স যেমন একদিনে এমন অবস্থানে পৌঁছাননি, তেমনি অন্যদেরও ইউটিউব থেকে উপার্জন করতে চাইলে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতেই হবে। ইয়ান মড এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অন্য সব বিষয়ের মতোই ইউটিউবেও শীর্ষস্থানীয় উপার্জনকারীরা অন্য অনেকের দৃষ্টিতেই অসম্ভব পরিমাণ উপার্জন করছেন। আবার এর বিপরীতে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা আসলে কোনো অর্থই উপার্জন করতে পারছেন না। এসব জায়গাতে আপনাকে সামনের দিকে উঠে আসতে হলে আপনার মধ্যে বিশেষ কিছু দেখাতে হবে। আপনাকে মানুষের সামনে স্পেশাল হয়ে উঠতে হবে। এটা শেষ পর্যন্ত সকলের ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে না। তবে ধৈর্য ধরে থাকতে পারলে প্রত্যাশা অনুযায়ী না হলেও সাফল্য আসবে, হয়তো সেটা পিউডাইপাইয়ের মতো হবে না।’

0 comments

Blogger Widgets..